Surfe.be - Banner advertising service

Wednesday, March 25, 2020

ঘরে ঘরে রাত ১১টায় মোমবাতি প্রজ্বালনের আহ্বান

ঘরে ঘরে রাত ১১টায় মোমবাতি প্রজ্বালনের আহ্বান


গণহত্যা দিবসের আলোর মিছিল বাতিল

আজ ঐতিহাসিক ২৫ মার্চ। মহান মুক্তিযুদ্ধের শোকস্মৃতিবাহী গণহত্যা আর নিষ্ঠুর ধ্বংসযজ্ঞের ‘কালরাত’। জাতীয় ‘গণহত্যা দিবস’। বাঙালি জাতি গভীর বেদনায় প্রতি বছর স্মরণ করে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাপুরুষোচিত হামলার শিকার নিরীহ শহীদ আর প্রতিরোধ সংগ্রামে আত্মদানকারী বীর যোদ্ধাদের। কিন্তু এ বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের লক্ষ্যে আপৎকালীন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এই দিবসের সব আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। তবে দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। এদিকে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির প্রতি বছরের নিয়মিত আয়োজন ২৫ মার্চ গণহত্যার কালরাত্রির আলোর মিছিলসহ সব কার্যক্রমও স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার

নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে ঘরে থেকে আজ রাত ১১টায় প্রত্যেককে একটি করে মোমবাতি জ্বালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য, গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত সম্পন্নকরণ এবং শহীদদের আত্মদানের চেতনায় নিজেদের বোধ শাণিত করার জন্য শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ২৫ মার্চ সূচনা করেছিলেন গণহত্যার কালরাত্রি পালন কর্মসূচি। ২৮ বছর ধরে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ২৫ মার্চ রাতে এই কর্মসূচি পালন করে আসছে। এতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয়ে মোমবাতি হাতে আলোর মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের বধ্যভূমিতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। কিন্তু এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে এ কর্মসূচি স্থগিত করা হলো।



বিগত শতাব্দীর ষাটের দশকে স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নেয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন একাত্তরের মার্চে রূপ নেয় স্বাধীনতার সংগ্রামে। ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু-ইয়াহিয়ার সিরিজ বৈঠক ব্যর্থ হয়। জেনারেল ইয়াহিয়া খান বাঙালি হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়ে সেদিন বিকেলে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। বাংলা তখন অগ্নিগর্ভ। উত্তাল দিন শেষে ঘনিয়ে আসে আঁধার। কিন্তু বাঙালি জানতে পারেনি কী ভয়ংকর, নৃশংস ও বিভীষিকাময় এক কালরাত নেমে আসতে যাচ্ছে তাদের জীবনে।

‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে ২৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী দানবীয় নিষ্ঠুরতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। পাকিস্তানি সেনারা হামলে পড়ে পুরান ঢাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ ও সংলগ্ন এলাকা, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর (পরে বিডিআর, বর্তমানে বিজিবি) হেডকোয়ার্টার ও আশপাশের এলাকায়। কারফিউ জারি করা হয় শহরজুড়ে। জনবসতিতে দেওয়া হয় আগুন। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। শত শত হকচকিত নিরস্ত্র মানুষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘাতকের বুলেটে ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে। মধ্যরাতে ঢাকা হয়ে ওঠে লাশের শহর। নিরীহ, নিরপরাধ মানুষ হত্যার পৈশাচিক উল্লাসে নেচে ওঠে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। ২৫ মার্চ রাতে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকার বুকে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের ওই অপারেশনে কী ধরনের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল বিশ্ববাসী প্রথমে তা জানতে পারেনি।




আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ে সরকারের সর্বাত্মক উদ্যোগ

গণহত্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, “১৯৭১ সালের ২৫ মার্চে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরিচালিত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি বর্বরতম ও মর্মান্তিক ঘটনা।” রাষ্ট্রপতি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নিরস্ত্র অবস্থায় নির্মম গণহত্যার শিকার শহীদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের ব্যাপারে বর্তমান সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘২৫ মার্চ বাঙালি জাতির জীবনে সবচেয়ে ভয়াবহ দিন।


No comments:

Post a Comment

Surfe.be - passive income